প্রকাশিত: Sun, Jul 9, 2023 11:42 PM
আপডেট: Mon, May 12, 2025 9:51 PM

[১]যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিযোগীদের তুলনায় বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি বেড়েছে

রাশিদুল ইসলাম: [২] সামগ্রিক অর্থনৈতিক মন্দার তুলনায় বাংলাদেশ প্রতিযোগীদের তুলনায় বেশ কিছুটা ভালো করেছে। ২০২৩ সালের প্রথম পাঁচ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি পতনের কারণ হচ্ছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দা, মুদ্রাস্ফীতি এবং মার্কিন দর বৃদ্ধি। ফিনান্সিয়াল এক্সপ্রেস

[৩] কোভিড মহামারী ও ইউক্রেন যুদ্ধের জোড়া সংকটে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপে ক্রেতাদের কেনাকাটা কমে গেছে। এতে চীন, ভারত, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি কমেছে। এর ফলে মূল্য এবং আয়তন উভয় ক্ষেত্রেই এসব দেশের যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে। 

[৪] যুক্তরাষ্ট্রের মত দেশে পোশাকের একক বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য থেকে গত জানুয়ারি-মে মাসে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ৩.৩০ বিলিয়ন ডলার আয় করে। গত বছর একই সময়ে এ রপ্তানি আয় ছিল ৪.০৯ বিলিয়ন ডলার। এবার রপ্তানি আয় হ্রাস পেয়েছে ১৯.১৬-শতাংশ।

[৫] ওটিইএক্সএ ডাটা বলছে, শিপমেন্ট হ্রাসে একই প্রবণতা দেখায় কারণ এটি ওই সময়ের মধ্যে ৩০.৯১ শতাংশে ১.০১ বিলিয়ন বর্গ মিটারে হ্রাস পেয়েছে যা ২০২২ সালের একই সময়ের ১.৪৭ বিলিয়ন বর্গ মিটার ছিল। 

[৬] অন্যদিকে, চলতি বছরের শেষ পাঁচ মাসে সামগ্রিক মার্কিন পোশাক আমদানি ২২.৯২ শতাংশ কমে ৩১.৫১ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। ২০২২ সালের জানুয়ারি-মে সময়কালে তাদের পোশাক-আমদানি চিত্র ছিল ৪০.৮৯ বিলিয়ন ডলারের।

[৭] চীন ও ভিয়েতনাম  বাংলাদেশের প্রধান প্রতিযোগী। পর্যালোচনাধীন একই  সময়ের মধ্যে এ দুটি দেশের রপ্তানি কমেছে ৩০.৪৪ ও ২৮.০৭ শতাংশ। 

[৮] পোশাক রপ্তানিকারক এবং বিশেষজ্ঞরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক মন্দা, উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি এবং উচ্চ সুদের হারের মধ্যে একটি মন্থর চাহিদাকে এই পতনের কারণ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।

[৯] পোশাক শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন যে, অন্যান্য প্রতিযোগীর তুলনায় বাংলাদেশ এখনও তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থানে রয়েছে, ওসব দেশের উচ্চ শতাংশে রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।

[১০] তারা বলেছে, চীন থেকে মার্কিন ক্রেতাদের স্থানান্তর এবং চীন-প্লাস নীতি থেকে বাংলাদেশও উপকৃত হয়েছে। কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পোশাক চাহিদাকে প্রভাবিত করেছে, যার ফলে সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ক্রেতাদের উচ্চ তালিকা এবং কাজের আদেশ হ্রাস পেয়েছে।

[১১] বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সহ-সভাপতি মোঃ শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ভূ-রাজনৈতিক সঙ্কট, অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও সুদের হারের কারণে বিশাল ইনভেন্টরি পোশাকের চাহিদাকে খেয়ে ফেলেছে।

[১২] বাংলাদেশ গত কয়েক মাস ধরে ৩০-৪০-শতাংশ কম কাজের আদেশ পেয়েছিল কারণ ক্রেতাদের বিশাল ইনভেন্টরি মূলত উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং সুদের হারের কারণে হয়েছে।

[১৩] এক প্রশ্নের জবাবে শহীদুল্লাহ আজিম বলেন, ভিয়েতনাম উচ্চ মূল্য সংযোজন পণ্য উৎপাদন করে যা উচ্চ মূল্য পায়। 

[১৪] রাইজিং গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদ হাসান খান বলেন, অর্থনৈতিক মন্দা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি এবং উচ্চ সুদের হারের কারণে সামগ্রিকভাবে মার্কিন আমদানি কমে গেছে। ফলস্বরূপ, আরএমজি আইটেমগুলির চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই ধরনের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। 

[১৫] তিনি অবশ্য বলেছেন, ক্রেতারা অর্ডার দিচ্ছেন যা তাদের (মার্কিন) উৎসব যেমন ক্রিসমাস এবং নববর্ষ উদযাপনের আগে অক্টোবরে পাঠানোর কথা।

[১৬] তিনি আরও মনে করেন যে প্রধানত মূল্য সংযোজন আইটেম এবং উচ্চ কাঁচামালের দামের কারণে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পোশাকখাতটি প্রবৃদ্ধি বজায় রাখলেও, পরিমাণের দিক থেকে রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব